1. hossainahmednumanbd@gmail.com : admin : হোসাইন আহমদ
  2. Chilauranews@gmail.com : হোসাইন আহমদ : হোসাইন আহমদ
কলম' হচ্ছে একটি মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু, 'লেখক' হচ্ছেন মর্যাদাশীল
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:১০ অপরাহ্ন

কলম’ হচ্ছে একটি মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু, ‘লেখক’ হচ্ছেন মর্যাদাশীল

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪
20240414 221849

মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআন মজিদে ‘কলম’ নামের একটি সূরা নাজিল করে মানব জাতিকে লেখনীর প্রতি উৎসাহিত করেছেন। মহানবী সা. এর প্রতি বিশ্ব প্রতিপালকের প্রথম নাজিল করা বাণীগুলোয় ছিল কলমের গুণগান। যেমন মহান রাব্বুল আলামিন বলেন ‘পড়ো তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক থেকে। পড়ো আর তোমার রব মহামহিম। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। (আল কুরআন; ৯৬ : ১-৪)। লেখালেখির গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মহানবী সা. বলেছেন, তোমরা জ্ঞানকে আটকে রাখো লেখার মাধ্যমে। বিখ্যাত মুফাসসির ইমাম কুরতুবী রহ. লেখালেখির গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন- ‘যদি লেখা না হতো, তাহলে দ্বীন ও দুনিয়ার শৃঙ্খলা ঠিক থাকত না।’ (সাফওয়াতুত তাফাসির)

 

ইতিহাস বৃত্তাদের মাধ্যমে জানা যায়, লেখার প্রথা অতি প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সর্বপ্রথম লেখার প্রথা প্রবর্তন করেন। তিনি এ পার্থিব জগৎকে সৃষ্টি করার ৫০ হাজার বছর আগেই সমগ্র সৃষ্টিজীবের ‘ভাগ্য’ লিখেছিলেন। মহান রাব্বুল আলামিন কলমকে মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেননা তিনি মূলত মানবজাতিকে একটি মহামূল্যবান সম্পদ (কলম) দান করেছেন। তাই বলা হয়, ‘কলম হচ্ছে, একটি মর্যাদাসম্পন্ন বস্তু এবং লেখক হচ্ছেন মর্যাদাশালী।’

 

কলমের গুরুত্ব সম্পর্কে বিখ্যাত সাহাবি হজরত জায়েদ ইবনে সাবেত রা. মহানবী সা.-এর একটি হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি মহানবী সা.-এর কাছে গেলাম এমন সময় তার সম্মুখে একজন কাতেব (লেখক) ছিলেন। তিনি (কাতেবকে লক্ষ্য করে) বললেন ‘কলমটি তোমার কানের ওপর রাখো। কেননা এতে প্রয়োজনীয় কথা বেশ স্মরণে আসে।’ (মিশকাত)

এমনিভাবে বলা হয়ে থাকে; কলম হচ্ছে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রচার-প্রসার এবং বংশানুক্রমে জ্ঞানের উত্তরাধিকার সৃষ্টি এবং বিকাশ সাধন ও সংরক্ষণের মাধ্যম। মহান রাব্বুল আলামীন যদি ইলহামি চেতনার সাহায্যে মানুষকে কলম ব্যবহার ও লেখার কৌশল শিক্ষা না দিতেন, তাহলে মানবজাতির জ্ঞান অর্জন ও প্রচার-প্রসারের যাবতীয় স্বভাবসিদ্ধ যোগ্যতা ও প্রতিভা সম্পূর্ণ নিরর্থক হয়ে যেত। তাইতো পূর্বসূরী পণ্ডিতগণ লেখালেখির গুরুত্ব অপরিসীম বলে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন।

 

ইসলাম বিদ্যার্থীর কলমের কালিকে অত্যন্ত মর্যাদার চোখে দেখে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা লেখে না, ইসলাম মনে করে সে নিজের এবং অন্যের অধিকার নষ্ট করেছে। নিজের অধিকার নষ্টের অর্থ হলো নিজেকে ফলপ্রসূ হওয়া থেকে বঞ্চিত করা, উত্তম কাজগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা। ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে জানতে না দেয়া। আর অন্যের অধিকারের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ তার সারগর্ভ দিকনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফলে পথহারা অনেক মানুষ সত্য সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারেনি। একটি লেখা শুধু সমকালীন মানুষকেই লাভবান করে না, বরং ওই লেখা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আদর্শ সমাজ গঠনে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে।
তাই আসুন, মহান আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকতে এবং মানুষের মধ্যে সত্য ও সুন্দরের আলো ছড়িয়ে দিতে লেখালেখি করি। কলমকে মর্যাদাসম্পন্ন বস্তুতে ব্যবহার করি, কারণ লেখক হলেন মর্যাদাশালী।

 

অন্যের ক্ষতির লক্ষ্যে কলমকে ব্যবহার না করার চেষ্টা করি। কলম হোক উপকারের বাহন।

 

লেখক: ড. সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ

অধ্যক্ষ, সৈয়দপুর সৈয়দিয়া শামছিয়া ফাজিল মাদরাসা, জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ,

মোবাঃ 01712-035592

Facebook Comments Box

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০১৮-২০২৪ চিলাউড়া.কম